Education

বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের ১০টি উপায় 

পৃথিবী যত আধুনিক হচ্ছে, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ করা যেন কঠিন হয়ে পড়ছে। তারপরেও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার্থে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ করতে হবে। কিন্তু অনেকেই বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের উপায় সম্পর্কে সঠিক জানে না। 

তাই আজকের পোস্টে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের ১০টি উপায়, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে আমাদের করণীয় এসব আলোচনা করা হবে। 

বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের উপায় 

বর্তমান সময়ে বন্যপ্রাণী প্রায় বিলুপ্তির পথে। দেখা যাচ্ছে, বন উজার করে আমরা বিভিন্ন কলকারখানা তৈরি করছি। যার কারণে বন্যপ্রাণী তার বাসস্থান হারাচ্ছে। যার প্রতিফলন হিসেবে আজকের দিনে বন্যপ্রাণী প্রায় বিলুপ্তির পথে। 

কিন্তু প্রকৃতির এবং পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য অবশ্যই বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ করতে হবে। কেননা প্রকৃতির ভারসাম্য বজায় রাখতে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের কোন বিকল্প নেই। 

নিচে একদম পয়েন্ট আকারে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের উপায় ধাপে ধাপে উল্লেখ করা হয়েছে। 

বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের ১০টি উপায় 

বন উজার রোধ করা 

বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের প্রধান উপায় হচ্ছে বন উজার রোধ করা। বর্তমানে আমাদের দেশে দেখা যাচ্ছে, বন উজার করে বাসস্থান, ঘরবাড়ি ও কলকারখানা তৈরি করা হচ্ছে। তাই বন উজার না করে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি চালু করতে হবে। 

বৃক্ষরোপণ করা 

বাংলাদেশের অধিক জনসংখ্যার কারণে বন উজার করে সেখানে বসবাসের জন্য ঘরবাড়ি তৈরি করা হচ্ছে। এ কারণে আমাদের বেশি বেশি করে বৃক্ষরোপণ করতে হবে। 

শিকার বন্ধ করা

বন্যপ্রাণী বিলুপ্তির অন্যতম কারণ হচ্ছে বন্যপ্রাণী স্বীকার করা। বিশেষ করে, গ্রাম অঞ্চলে বন্যপ্রাণী শিকারের হার অনেক বেশি। এ কারণে শিকারীদের ভালোভাবে বোঝাতে হবে। তারপরেও তারা যদি না বোঝে তাহলে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া। কারণ বন্যপ্রাণী স্বীকার করা দন্দনীয় অপরাধ।  

বন্যপ্রাণী ব্যবসা বন্ধ করা 

গ্রাম অঞ্চল থেকে বন্যপ্রাণী স্বীকার করে শহরাঞ্চলে বিক্রি করা হয়। এ কারণে আমাদের বন্যপ্রাণী ব্যবসা বন্ধ করতে হবে। বন্যপ্রাণী ব্যবসা বন্ধ করতে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। 

পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ করা 

অতিরিক্ত পরিবেশ দূষণের কারণে অনেক সময় বন্যপ্রাণী মা*রা যায়। এছাড়া দূষণের ফলে তাদের বসবাস করাটাও কষ্টসাধ্য। এ কারণে পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ করা খুবই জরুরী। 

বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য পরিদর্শন করা 

বাংলাদেশ বন বিভাগের সহযোগিতায় আমরা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য পরিদর্শন করতে পারি। নিয়মিত যদি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য পরিদর্শন করা যায়। তাহলে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে অনেক ভূমিকা রাখবে। 

জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা 

বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ কারণে স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসা, হাট-বাজার সব জায়গাতেই জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। 

বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ সংস্থায় অনুদান প্রদান

বর্তমানে বেশ কয়েকটি বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ সংস্থা রয়েছে। যারা বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে বিশেষ ভূমিকা রাখছে। তাদের যদি কিছু টাকা অনুদান প্রদান করা হয় তাহলে তারা বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে আরো কাজ করতে উৎসাহিত হবে। 

স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করা

বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে নিজের পরিবার, বন্ধুবান্ধব এবং আত্মীয়-স্বজনদের নিয়ে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করতে হবে। 

পরিবেশবান্ধব জীবনযাপন করা 

পরিবেশবান্ধব জীবন-যাপন করার মাধ্যমে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ করা সম্ভব। কেননা পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ করা , শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণ এবং পানি দূষণ নিয়ন্ত্রণ করার মাধ্যমে আমরা পরিবেশবান্ধব জীবন-যাপন গড়তে পারি।  

ছোটদের শিক্ষা দেওয়া 

ছোট বাচ্চা ব এবং কিশোররা অনেক সময় শখের বসে বন্যপ্রাণী শিকার করে। এ কারণে ছোট বাচ্চা এবং কিশোরদের বন্যপ্রাণী শিকার করার কুফল সম্পর্কে বোঝাতে হবে। 

উপরোক্ত এই ১০টি উপায় অবলম্বন করে আমরা বন্যপ্রাণী খুব সহজেই সংরক্ষণ করতে পারব।

বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের ৫টি উপায় 

  1. বন উজার রোধ/বন্ধ করা;
  2. প্রচুর পরিমাণে বৃক্ষরোপণ করা; 
  3. বন্যপ্রাণী শিকার বন্ধ করা;
  4. পরিবেশ দূষণ রোধ করা; 
  5. বন্যপ্রাণী ব্যবসা বন্ধ করা। 

এছাড়াও, জনসচেতনতা বৃদ্ধি, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ সংস্থা সমূহকে অনুদান প্রদান, কিশোরদের উপদেশ প্রদান করার মাধ্যমে আমরা বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ করতে পারি। 

বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের উপায় পয়েন্ট আকারে

বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের উপায় পয়েন্ট আকারে উপরে উল্লেখ করেছি। উপরে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের ১০টি উপায় খুব সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। 

এর পাশাপাশি আমাদের প্রচুর পরিমাণে জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। যার মাধ্যমে আমরা বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ করতে পারি। 

বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে আমাদের করণীয়

বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে আমাদের করণীয়গুলো উল্লেখ করা হলো। 

  • বন উজার বন্ধ বা রোধ করা; 
  • বন্যপ্রাণী শিকার বন্ধ করা; 
  • বন্যপ্রাণী ব্যবসা বন্ধ করা;
  • বৃক্ষরোপণ করা; 
  • বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ সংস্থার সমূহকে অর্থ দান করা; 
  • স্কুল-কলেজ, মসজিদ-মাদ্রাসা, হাট-বাজার এবং জনবহুল স্থানে জন সচেতনতা বৃদ্ধি করা;
  • পরিবেশবান্ধব জীবনযাপন করা; 
  • পরিবেশ ও পানি দূষণ প্রতিরোধ করা। 

বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে মানুষের করণীয়

বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে মানুষের প্রধান করণীয় হল জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা। জনসচেতনতা বৃদ্ধি করার মাধ্যমে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ করা সম্ভব। 

এর পাশাপাশি বৃক্ষরোপণ করতে হবে, বন উজার রোধ করতে হবে, বন্যপ্রাণী শিকার বন্ধ করতে হবে, পরিবেশবান্ধব জীবনযাপন করতে হবে এবং কিশোরদের শিক্ষা প্রদান করতে হবে। 

উপরোক্ত এই কয়েকটি কাজ করার মাধ্যমে আমরা খুব সহজেই বন্যপ্রাণী বিলুপ্তির পর থেকে সংরক্ষণ করতে পারি। 

Nawshin Kotha

I am Nawsin Hasan Kotha. I am Living in USA. I am a SEO expert.

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button